
ওশান নিউজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবার নিজেও তার দেশে ফেরার তারিখ উল্লেখ করেছেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতে লন্ডনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, ইনশাআল্লাহ, আমি আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে যাবো। আপনাদের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর কাজ করেছি।
একইসঙ্গে দেশে ফেরার সময় লন্ডনের বিমানবন্দরে কোনও ধরনের হট্টগোল সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানান। কেউ যেন বিমানবন্দরে না যান এমন অনুরোধ করেন তিনি। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তারেক রহমান বলেন, প্রায় দুই মাস পর দেশে বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং তাদের সামনে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি কোনো স্বপ্নের মধ্যে নেই, আমি আছি পরিকল্পনার মধ্যে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সংকটময় সময়ে দেশকে খাদ্যসংকটের কিনারা থেকে উদ্ধার করেছিল দাবি করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনেও জনগণের সমর্থনে সরকার গঠন করতে পারবে বিএনপি।
তবে সামনে পথ অত্যন্ত কঠিন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, এই কঠিন পথ অতিক্রম করতে হলে সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ সময় তিনি দলের ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার ও উন্নয়ন পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
তিনি জানান, দেশের অসচ্ছল পরিবারের জন্য মাইক্রোচিপ সংযুক্ত ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করা হবে, যা পরিবারের গৃহকর্ত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি কৃষকদের জন্য ‘কৃষক কার্ড’ চালুর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
শিক্ষা খাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জোরদার, মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
সরকার গঠন করলে শিশুদের জন্য ‘কুঁড়ি’ টেলিভিশন অনুষ্ঠান নতুনভাবে সাজানো হবে এবং সেখানে খেলাধুলা অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া প্রবাসীদের জন্য ভাষা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, স্বাস্থ্যসেবায় রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া এবং স্বাস্থ্য খাতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ চালুর পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, এসব উদ্যোগের সুফল তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই জনগণ পাবে।
কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আয় বাড়াতে সরকারি সহায়তা, ছোট ওয়ার্কস্পেস, ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা এবং ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলেই একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
যুক্তরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব খসরুজ্জামান খসরুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমানসহ বিএনপির অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বেশ কিছুদিন
ধরে আলোচনা চলছে। সর্বশেষ, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
জানিয়েছেন, ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান।